খুলনা, বাংলাদেশ | ২২ আষাঢ়, ১৪৩১ | ৬ জুলাই, ২০২৪

Breaking News

  জাতীয় দাবা চলাকালীন অসুস্থ হয়ে গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমানের মৃত্যু
  ফরিদপুরে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে চালক-হেলপার নিহত

বৃহস্পতিবার ফের রাজপথে নামার ঘোষণা দিয়ে শাহবাগ ছাড়লেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা

গেজেট ডেস্ক 

২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখাসহ চার দফা দাবিতে শাহবাগে দ্বিতীয় দিনের মতো দেড় ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি করে সরে গেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বেলা ১১টা থেকে পুনরায় রাজপথে অবস্থান কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দিয়ে কর্মসূচি সমাপ্ত করেন তারা।

এর আগে বুধবার (৩ জুলাই) বেলা আড়াইটায় হাইকোর্ট কর্তৃক প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের আদেশের বিরুদ্ধে এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে লাগাতার আন্দোলনের অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে থেকে মিছিল বের করেন। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর-টিএসসি-হাইকোর্ট-মৎস্যভবন হয়ে বিকেল পৌনে ৪টা থেকে পৌনে ৫টা পর্যন্ত শাহবাগে অবস্থান করেন তারা।

বিভিন্ন হল থেকে ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। আজকের কর্মসূচিতে নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছিলো উল্লেখযোগ্য। অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে পুরো শাহবাগ এরিয়াতে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে পরে। সাধারণ জনগণ গাড়ি ছেড়ে হেঁটে গন্তব্যের দিকে যেতে থাকেন। তবে এম্বুলেন্স নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য শিক্ষার্থীরা জায়গা করে দেয়।

এ সময় শিক্ষার্থীদের মুখে ‘সংবিধানের/মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুর আরেকবার”, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, “কোটা প্রথা, বাতিল চাই বাতিল চাই’, ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট একশন’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই’’- ইত্যাদি স্লোগানে মুখরিত ছিল শাহবাগ এলাকা।

পাশাপাশি অবরোধ কর্মসূচিতে বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকজন শিক্ষার্থী বক্তব্য দেন। এসময় ৪ দফা দাবি তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা। দাবিসমূহ হলো :

১. ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখা।
২. পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠনপূর্বক দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরির সমস্ত গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া (সুবিধাবঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী ব্যাতীত)।
৩. সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া।
৪. দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করা।

মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান ঢাবির গনিত বিভাগের শিক্ষার্থী ফারাবী রহমান শ্রাবণ বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা কোনো বৈষম্য চায়নি। তারা চেয়েছিল সবার অধিকার নিশ্চিত করতে। তারা চেয়েছিল সাম্য, সুযোগের সমতা।কিন্তু সরকারি চাকরিতে এই ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা কখনোই সবার অধিকার নিশ্চিত করে না। আমি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান হিসেবে সকল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি- আপনারা দয়া করে শিক্ষার্থীদের এই ন্যায্য দাবির পাশে দাঁড়ান।

সমাজ বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা দেড় ঘণ্টা শাহবাগ মোড় অবরোধের পর আজকের মতো কর্মসূচি শেষ করছি৷ আগামীকাল হাইকোর্ট এই কোটা পুনর্বহালের রায় প্রদান করবে। তাই আমরা আগামীকাল সকাল ১১টায় আমাদের অবস্থান কর্মসূচি শুরু করবো। এসময় আমরা সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে অবস্থান গ্রহণ করবো। যদি হাইকোর্টের এই রায় আমাদের বিরুদ্ধে যায় তাহলে আমরা সে অনুযায়ী নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বাধ্য হবো।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!